Saturday, June 30, 2012

রাইটার্স ব্লক

বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ চোখ বন্ধ করে বসে রইলো ঐন্দ্রিলা। নানা এলোমেলো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়। কি লিখবে বুঝতে পারছেনা। কিছুক্ষণ নেট সার্ফ করলো। গান শুনলো, চাও খেল এক কাপ। বাইরে ঘুরে এলো। নাহ, মন বসাতে পারছেনা আজকে।  

রাইটার্স ব্লক কি একেই বলে?   

কত কিছু  ভিড় করে এলো স্মৃতিতে - প্রথম তীব্র ভালোলাগার অনুভূতি, রাজদীপের সঙ্গে বারিস্তাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকা, কারণে অকারণে হাসা, উদ্দেশ্যহীন হাঁটা, আরো কত কিছু ...। নিজের মনেই হাসলো কি সে? স্মৃতি কত সুন্দর, কত রোমান্টিক! নাকি উল্টোটা?


আজকাল আর অতীত নিয়ে খুব একটা ভাবেনা ঐন্দ্রিলা। তাই ঝট করে মনটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল। লেখাতে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করলো। কিন্ত নাহ! সেই একই সমস্যা। মাথায় কিচ্ছু আসছে না। পুরো ফাঁকা। খুব অসহায় বোধ করল ঐন্দ্রিলা। কেন এমন হচ্ছে তার সঙ্গে? নিজেকে বোঝালো খানিকক্ষণ। আসলে আজকাল খুব একা হয়ে গেছে সে। প্রাণ খুলে হাসতেও ভুলে গেছে যেন। এক এক সময় মনে হয় গোটা পৃথিবীতে সে একা! তাকে বোঝার, ভালবাসার, কাছে টেনে নেওয়ার কেউ নেই। সবার মাঝে থেকেও ভীষণই একা। কিন্তু একা কে নয়? সব মানুষই তো কোথাও না কোথাও একা, নিঃসঙ্গ। শুভটাও দিল্লি গেছে। শুভ তার ভালো বন্ধু, অনেক সুখ দুঃখের সাথী। কিন্তু তাকেও কি সব কথা বলা যায়? এক অজানা ভয় গ্রাস করলো তাকে...সব কিছু নতুন করে হারানোর ভয়! আর হারতে বা হারাতে চায় না সে। সে থাক! কত কিছু তো অধরা রয়ে যায় জীবনে...কোনো কিছু নিয়েই আর আফসোশ নেই ঐন্দ্রিলার। সব কঠিন ঝড় ঠিক সামলে উঠবে সে। সে না ফাইটার? এখন শুধু সামনে এগিয়ে চলার পালা। নিজের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার পালা। অনেকের অনেক কথার জবাব দেবার পালা। 

রাইটার্স ব্লক টা অনেকটা কেটে গেছে এখন। মাথাটা অনেক হালকা। চাপ মুক্ত। কম্পিউটারে লগইন করলো ঐন্দ্রিলা। লেখাটা এগোতে লাগলো তরতর করে...


No comments:

Post a Comment

Please stop by and leave your comments and suggestions!